আপনার বিজনেস গোল কিভাবে সেট করবেন

আপনার বিজনেস গোল কিভাবে সেট করবেন

বিজনেস লাইফে সফল হতে হলে অবশ্যই আপনাকে একটি গোল বা টার্গেট ঠিক করে কাজ করতে হবে। গড়পড়তা পরিশ্রমে যেমন সফল হওয়া যায়না তেমনই লক্ষ্যহীন পথচলাও মানুষকে সফলতায় চুড়ায় পৌঁছাতে পারেনা। এজন্য প্রয়োজন একটি গোল বা টার্গেট নির্ধারণ করা। আর তা বাস্তবায়নের জন্য স্ট্র্যাটেজি বিল্ড করা।  যেমন আগামী ২০২৩ সালের শেষে আপনি নিজেকে কোন পর্যায়ে দেখতে চান। আপনার বিজনেসের কতটুকু সমৃদ্ধি কামনা করেন। তার একটি গোল বা লক্ষ্য আপনাকে এখনই ঠিক করতে হবে।

আজকে আমরা কথা বলব কীভাবে একটি গোল সেট করে খুব স্মুথলি বা খুব সহজে সেই গোল এচিভ করা যায়

প্রথমে আপনাকে একটি টার্গেট ঠিক করতে হবে। আগামী একবছরে আপনি কী পরিমাণ আয় করতে চান? কতজন কাস্টমারকে সার্ভিস দিতে চান? আপনার ব্র্যান্ড এওয়ার্নেস কী পরিমাণ বাড়াতে চান। এটা অবশ্যই আপনার সক্ষমতা বা ধারণক্ষমতা বুঝে ঠিক করতে হবে।

মনে করুন একজন ব্যক্তির ২০২২ সালে মোট আয় ১০ লক্ষ টাকা। একবছরে সে সার্ভিস দিয়েছে ১০০০ মানুষকে। সে চায় আগামী বছর ১ কোটি টাকা আয় করতে এবং ১০ হাজার মানুষকে সার্ভিস দিতে। তো আগামী একবছরের জন্য এইটা একটা গোল। এখন এই গোলকে এচিভ করতে হবে বা এই টার্গেটে পৌঁছাতে হবে।

আগামী এক বছরে ১ কোটি টাকা আয় করতে চাওয়া একটি চ্যালেঞ্জ। আর এই চ্যালেঞ্জ পূরণ করতে যেমনভাবে আপনাকে একটি স্ট্র্যাটেজি বিল্ড করতে হবে বা একটি ছক আঁকতে হবে তেমনই এর মাঝে প্রতিবন্ধকতাগুলোকে খুঁজে খুঁজে দূর করতে হবে। আসুন বিজনেস গোল এচিভ করার একটি রোডম্যাপ আমরা দেখি।

“জীবনকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সবচেয়ে ভালো একটি উপায় হল, একটি লক্ষ্য পূরণের পর আরও বড় লক্ষ্য ঠিক করা”

গোল এচিভ করার রোডম্যাপ

সফল হতে বিজনেস গোল সেট করা যতটা জরুরী ততটাই আবশ্যক এই গোল স্পর্শ করা বা টার্গেট ফিলাপ করার ম্যাপ তৈরী করা। শুধু গোল সেট করে বসে থাকা ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখার মধ্যে আহামরি কোন পার্থক্য নেই। চলুন গোল এচিভ করার একটি রোডম্যাপ আমরা দেখি।

১. মনের ভিতর একটা ছবি আঁকা। আগামী একবছর পর আমি এই স্থানে সমাসীন হয়ে আছি। এমন একটা ছবি মনের গ্যালারীতে ভালো করে সেভ করে নিতে হবে।

 

২. একটি স্ট্র্যাটেজি তৈরী করা৷ আগামী একবছরে তো আমার টার্গেট এই! সো এই টার্গেটে পৌঁছাতে হলে আমার এই কাজ করা দরকার। কোনটা আগে করা দরকার কোনটা পরে করা দরকার তার একটা শিডিউল তৈরী করতে হবে । কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছাতে আমার এই পরিমাণ লার্নিং দরকার তারও একটা শিডিউল সামনে রাখতে হবে।

৩. একাউন্টিবিলিটি তৈরী করা। একাউন্টিবিলিটি বলতে নিজের ভিতর একপ্রকার দায়বদ্ধতা তৈরী করা। যে আমার গোল এচিভ করার জন্য পাঁচটি স্টেপ। প্রতিটি স্টেপ পূরণ করা আমার দ্বায়িত্ব।  এবং এটা অবশ্যই করতর হবে। এমন একটা দায়বদ্ধতা তৈরী করতে হবে।

৪. সর্বশেষ হচ্ছে উপরের তিনটা স্টেপকে সম্পাদন করা। আর এটাই হচ্ছে একশন স্টেপ। আপনি অনেক স্বপ্ন দেখলেন অনেক স্ট্র্যাটেজি তৈরী করলেন বাট সেটা সম্পাদন করলেন না তাহলে সবই বেকার। সো এটা মোস্ট ইম্পর্ট্যান্ট।  এই রোডম্যাপ তৈরীর সাথেসাথে আবশ্যকীয়ভাবে আরো তিনটি কাজ করতে হবে।

আবশ্যকীয় তিনটি কাজ

বিজনেসে সফলতা অর্জন করতে একটি গোল সেট করলাম। আবার তা পূরণ করতে রোডম্যাপও তৈরী করলাম। এরপরও আমাদের সার্বিক কাজকে গতিশীল করতে আরো তিনটি কাজ করা উচিত। 

১. নিজের জন্য একজন একাউন্টিবিলিটি পার্টনার খুঁজে নিতে হবে৷ একাউন্টিবিলিটি পার্টনার বলতে এমন কাউকে ঠিক করতে হবে যে আপনাকে সময় অসময়ে পরামর্শ দিবে। এবং আপনার কাজের জবাবদিহিতা করবে। একাউন্টিবিলিটি পার্টনার কে আমরা মেন্টরও বলতে পারি। তবে মেন্টর শুধু পরামর্শ দিয়ে থাকে সে কোনপ্রকার জবাবদিহি করেনা। আর একাউন্টিবিলিটি পার্টনার যে হবে সে পরামর্শ না দিলেও অবশ্যই কাজের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করবে। কাজ শুরু করার ব্যাপারে চাপ প্রয়োগ করবে। একাউন্টিবিলিটি পার্টনার ফ্রীও পাওয়া যায় আবার পেইডও রাখা যায়।

২. পাস্ট প্রেজেন্ট ফিউচারের একটি লিস্ট করতে হবে। অতীতে আমার বিজনেস গোল এচিভের জন্য আমি কী করতাম। তার কোনটা কোনটা ফলপ্রসূ ছিল কোনটা বিফল হয়েছে তার একটা লিস্ট করা। বর্তমানে কী করছি। কীভাবে গোল এচিভের চেষ্টা করছি তার একটা তালিকা তৈরী করা। ভবিষ্যতে কি কি করব বা করা উচিৎ তার তালিকা তৈরী করা। 

৩. নিজের জন্য একশনেবল টাস্ক তৈরী করা। একশনেবল টাস্ক বলতে প্রতিদিন কী করতে হবে আমাকে তা তালিকাবদ্ধ করে কাজ শুরু করা। অনেকসময় হয় কি আমরা অনেক ম্যাপ করি। অনেক স্ট্র্যাটেজি বিল্ড করি। অধিনস্ত সবাইকে সবার কাজ বুঝিয়ে দিই। বাট নিজে কোন কাজ করিনা। বা নিজের একশনেবল টাস্ক থাকেনা। এমনটা করা যাবেনা। নিজের জন্য একশনেবল টাস্ক তৈরী করতে হবে। এবং নিজের একাউন্টিবিলিটি পার্টনারের সহায়তায় তা নিয়মিত পূরণ করতে হবে।

এই হল মোটামুটি একটি বিজনেস গোল সেট করা ও তা এচিভ করার প্রঅথমিক কিছু ফর্মুলা। এই ফর্মুলা ফলো করলে আমাদের এগিয়ে যাওয়াটা সহজ হবে অনেকাংশেই। সো এবার এগিয়ে যাওয়ার পালা।

Share:
Facebook
Twitter
LinkedIn
Scroll to Top